ছবি : সংগৃহীত
বাংলাদেশে বিমান দুর্ঘটনা যেন সড়ক দুর্ঘটনার মতো বেড়েই চলেছে। যার সর্বশেষ সংযোজন বাংলাদেশের একটি বিমান মিয়ানমারের ইয়াংগুণ বিমানবন্দরে অবতরণের সময় রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়ে। এতে আহত হন ১৮জন যাত্রী।
গত বছর বেসরকারি বিমান ইউএস বাংলার একটি ফ্লাইট নেপালে বিধ্বস্ত হলে মোট ৫১ জন নিহত হন, যাদের যার মধ্যে ২৬ জন বাংলাদেশি। এর পর এই একই এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট ফাটা চাকা নিয়ে ঢাকা থেকে সিলেটে অবতরণ করে।
এ বছরের এপ্রিল মাসে বিমান বাংলাদেশের একটি বিমান সিঙ্গাপুর থেকে ঢাকায় ফেরার পথে ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়। পরে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করতে বাধ্য হয়।
দেশে বিমানের বড় ধরনের দুর্ঘটনার ইতিহাস না থাকলেও সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনা নিরাপত্তার ব্যাপারে যাত্রীদের মধ্যে কিছুটা উদ্বেগ তৈরি করেছে। বিমানের যাত্রীসেবার মান নিয়েও অনেক বিতর্ক হয়েছে। কিন্তু তার কোনো উন্নতি হয়নি।
প্রয়োজনের তাগিদে যারা নিয়মিত বিমানে ভ্রমণ করেন, তাদের মনে দেখা দিয়েছে এক ধরণের ভীতি, ভয় এবং শঙ্কা। নিরাপত্তার বিষয়টিও ভাবিয়ে তুলেছে বিমান যাত্রীদের। অধিকাংশ যাত্রীরা এখন বাংলাদেশ বিমান বাদ দিয়ে অন্য বিদেশি এয়ারলাইন্সের দিকে ঝুঁকছেন।
যাত্রীদের এ ধরনের উদ্বেগ অবশ্যই যোক্তিক। কারণ, একটি দুর্ঘটনা ঘটার পর তার পুনর্রাবৃত্তি না ঘটে তার জন্য কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছেন না কর্তা ব্যক্তিরা। দায়িত্বে অবহেলার বিষয়টি আলোচনায় এসেছে অনেকবার। কিন্তু তারপরও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। বিষয়টি দেশের একমাত্র সরকারি এয়ারলাইন্সের ভাবমূর্তি দারুণভাবে ক্ষুন্ন হচ্ছে।
যাত্রীদের অভিমত, বিমানের বর্তমান অবস্থায় যাত্রীদের প্রাণের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে বিমান চলাচলের প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। পাইলটদের প্রশিক্ষণের যদি কোন ঘাটতি থাকে তবে সেটা বৃদ্ধি করতে হবে এবং সেই সাথে রক্ষণাবেক্ষণের বিষয়টিও গুরুত্ব দিতে হবে। এছাড়া দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের দক্ষতা বৃদ্ধির ওপর জোর দিতে হবে। আর এ সব পদক্ষেপ নেওয়া না হলে বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স থেকে যাত্রী মুখ ফিরিয়ে নেবে। আর যাত্রীরা বিমান ভ্রমণে অনাগ্রহী হয়ে উঠলে বাংলাদেশ বিমানের লোকসান দিন দিন বৃদ্ধি পাবে, যার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে দেশের গোটা অর্থনীতিতে। সেই আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশের বিমান পরিবহণের অব্যবস্থাপনা দেশের ভাবমূর্তিতে বিরূপ প্রভাব পড়বে।
আরও পড়ুন :